শিক্ষা খবরশিক্ষা নিউজ

রমজান মাসে স্বাস্থ্যর জন্য উপকারিতা ও গুরুত্ব

রমজান মাস স্বাস্থ্যর জন্য উপকারিতা ও গুরুত্ব।ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ রোজা। প্রত্যেক মুসলমানের উপর রোজা ফরজ। তাই এর গুরুত্ব অপরিসীম। তাকওয়া অর্জনের এক অনন্য উপায় রোজা। কেননা রোজার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ সহজ হয়। তাই আত্মিক উন্নতি সাধনে রোজা গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘রোজা আমার জন্য এবং এর প্রতিদান আমি নিজ হাতে দেব।’ তবে আত্মিক উন্নতির পাশাপাশি শারীরিক উন্নতিতেও রোজার বিশেষ ভূমিকা রাখে। কারণ রোজা বিভিন্ন প্রকার রোগ-ব্যাধি থেকে দেহের ভারসাম্যকে বজায় রাখে। বিশেষ করে রোজা রাখলে গ্যাসটিক, ডায়াবেটিস ও মেদ কমাসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি নিয়ন্ত্রণে থাকে।

স্বাস্থ্যবিজ্ঞানী ডা. আব্রাহাম জে হেনরি রোজা সম্পর্কে বলেছেন, ‘রোজা হলো পরমহিতৈষী ওষুধ বিশেষ। কারণ রোজা পালনের ফলে বাতরোগ, বহুমূত্র, অজীর্ণ, হৃদরোগ ও রক্তচাপজনিত ব্যাধিতে মানুষ কম আক্রান্ত হয়।’নোবেল বিজয়ী জাপানি বিজ্ঞানী ইয়োশিনোরি ওসুমির গবেষণায় রোজা বা পানাহার বিরতির উপকার বিষয়টি উঠে এসেছে। এ গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘক্ষণ খারার বিরতির ফলে পুরাতন প্রোটিন রিসাইকেল হয়ে নতুন প্রোটিন তৈরি হয়। অর্থাৎ শরীরের প্রতিনিয়ত যে টক্সিনগুলো জমা হচ্ছে, খারার বিরতির ফলে সেগুলো বিষমুক্ত হওয়ার সুযোগ পায়। একইভাবে পবিত্র মাহে রমজানে রোজা রাখার ফলে শরীর টক্সিন মুক্ত হয়।

রোজার স্বাস্থ্য উপকারিতা বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত। উন্নত বিশ্বে ‘ফাস্টিং’ বা পানাহার বিরতিকে থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রায় ৮০টি রিসার্চে ‘ফাস্টিং’ বা রোজার উপকারিতা সম্পর্কে তুলে ধরা হয়েছে।রোজার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিশ্বখ্যাত চিকিৎসাবিজ্ঞানী নাস্টবারনার বলেছেন, ‘ফুসফুসের কাশি, কঠিন কাশি, সর্দি এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা কয়েক দিনের রোজার পালনেই নিরাময় হয়।’

ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে রোজা
দেহে উৎপাদিত গ্লুকোজ ক্যান্সার কোষের প্রধান খাদ্য। গ্লুকোজ অনেকগুলো ব্যাকটেরিয়ার মিডিয়া, অর্থাৎ বিভিন্ন রোগ-জীবাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাশাপাশি ক্যান্সার সেলগুলোকেও বাড়তে সহায়তা করে। তাই খাবারের দীর্ঘ বিরতির তথা অটোফেজির মাধ্যমে ক্যান্সার কোষগুলো আকারে ছোট হয়ে যায়। এসময় ব্যায়াম করলে দেহে প্রাকৃতিক কিলার সেল উৎপন্ন হয়, যা ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে সহায়তা করে। অন্যদিকে, না খেয়ে থাকার ফলে গ্রোথ হরমোন বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের খারাপ উপাদান নষ্ট করে ভালো উপাদান বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রোজা
রোজা রাখলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। দেখা গেছে, রোজা রাখার ফলে প্রাথমিক রোগী (প্রি ডায়াবেটিক) ও টাইপ-২ ডায়াবেটিক রোগীদের কোন ঔষধ ছাড়াই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এমনকি যাদের ইনসুলিন নিতে হয়, তাদের ইনসুলিন নেওয়ার মাত্রা কমে আসে।

হৃদরোগ ও লিভার সুরক্ষায় রোজা
হৃদরোগের প্রধান কারণ হলো রক্তনালিতে চর্বি জমে গিয়ে হার্টে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাওয়া। সাধারণত শরীরে চর্বি জমে যাওয়ায় এ ধরণের ঘটনাগুলো ঘটে। উচ্চ রক্তচাপ ও ওজন বেড়ে যাওয়াও হৃদরোগের কারণ হতে পারে। একইভাবে লিভারে চর্বি জমে রক্ত সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটায়। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই রোজার উপকারিতা লক্ষণীয়।স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের শরীরে এইচডিএল এবং এলডিএল পাওয়া যায়। এইচডিএল এমন ফ্যাট, যা বহু রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। বিপরীতে এলডিএল, যা মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে চরম ক্ষতিকারক। তবে রোজা যেমন রক্তনালিগুলোকে পরিষ্কার করতে সহায়তা করে, তেমনি শরীর থেকে চর্বি গলার পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। যা হৃদরোগে আক্রান্তদের জন্য খুবই উপকারী।

গ্যাস্ট্রিক ও আলসার সমস্যায় রোজা
গ্যাস্ট্রিক ও আলসার সমস্যা উপশমে রোজা কার্যকরী ভূমিকা রাখে। গবেষণা বলছে, দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার ফলে দেহে ইন্টেস্টিনাল স্টেম সেলগুলো তৈরি হয় এবং আমাদের পেটের আলসার হিলিং হয়ে লিকি (Leaky) গাটস (Guts) ভালো রাখতে সহায়তা করে। লিকি-গাটসের কারণে এক ধরণেন অ্যালার্জি হয়। যা পেটে হেলিকোব্যাক্টর পাইলেরি (H. Pylori) নামক আলসারের সৃষ্টি করে৷ তবে খাবার বিরতি বা রোজা এ জীবাণুকে ধ্বংসে সাহায্য করে।

রোজা মেদ কমাতে সহায়ক
রোজা থাকার ফলে দেহের অতিরিক্ত চর্বি কমতে থাকে। আমরা সচরাচর খবারে থাকা গ্লুকোজ থেকে শক্তি নিয়ে চলাচল করি। কিন্তু রোজায় পাকস্থলি খালি থাকায় দেহে গ্লুকোজ তৈরি কম হয়। ফলে পাকস্থলিতে খবার না থাকায় দেহের অতিরিক্ত চর্বি গলে (ফ্যাট বার্নিং) মানুষ চলাফেরার শক্তি অর্জন করে। তাই মেদ ও ওজন কমে যায়।

রোজাতে মিলে মানসিক প্রশান্তি
রোজা রাখলে যাবতীয় খারাপ কাজ থেকে বিরত থেকে মনে আল্লাহ ভীতি এবং তাকে স্বরণ করার মানসিকতা তৈরি হয়। অতিরিক্ত চিন্তা থেকে মস্তিষ্ক শান্ত থাকে। ফলে মনে প্রশান্তি আসে। ডা. আইজাক জেনিংস বলেছেন, ‘যারা আলস্য ও গোঁড়ামির কারণে এবং অতিভোজনের কারণে নিজেদের সংরক্ষিত জীবনী শক্তিকে ভারাক্রান্ত করে ধীরে ধীরে আত্মহত্যার দিকে এগিয়ে যায়, রোজা তাদেরকে এ বিপদ থেকে রক্ষা করে।

ত্বকের যত্নে রোজা
রোজা রাখা ত্বকের জন্য উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ খাবার বিরতি দেয়ার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং অ্যান্টি এজিং প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। কারণ অটোফেজি প্রক্রিয়ায় দেহের অপ্রয়োজনীয় ও নষ্ট কোষগুলো ধ্বংস হয়ে পুনরায় নতুন স্বাস্থ্যকর কোষ ও টিস্যু তৈরি হয়। আর পুরো এক মাস রোজা রাখলে এই প্রক্রিয়া আরো ভালোভাবে সম্পন্ন হতে পারে। দেহ নতুন কোলাজেন তৈরি করে। তাই ত্বক আরো উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে।

ইসলামে রোজার গুরুত্ব
ইসলামে রোজার গুরুত্ব অনেক। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের প্রতি, যাতে তোমরা পরহেজগার ও আল্লাহভীরু হতে পারো।’

সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন

The month of Ramadan is beneficial and important for health. The third pillar of Islam is fasting. Fasting is obligatory for every Muslim. So its importance is immense. Fasting is a unique way to achieve taqwa. Because it is easy to get closer to Allah through fasting. So fasting is important for spiritual improvement. In the Holy Qur’an, Allah declares, “Fasting is for me and I will pay for it with my own hands.”However, the rosary plays a special role in physical improvement as well as spiritual improvement. Because fasting maintains the balance of the body from various diseases. Especially if you keep fasting, you can control various diseases including gastric, diabetes, and obesity.

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে DailyResultBD.com ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group