শিক্ষা নিউজ

ইস্তিখারা কী, কেন ও কীভাবে?

ইস্তিখারা কী, কেন ও কীভাবে?  ইস্তিখারা হচ্ছে আল্লাহর কাছে পরামর্শ চাওয়া এবং তাঁর ইলম, কুদরত ও ফজীলতের মাধ্যমে তাঁর সাহায্য কামনা করা। আল্লাহর রসূল (ﷺ) এটা তাঁর সাহাবীদেরকে সেভাবে শিখিয়েছেন যেভাবে তিনি তাঁদেরকে কুরআন শিক্ষা দিতেন, যেমনটা বুখারী ও অন্যান্য হাদীস সংকলনে জাবির ইবন আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। যে ব্যক্তি ইস্তিখারা করবে সে তার কাজের জন্য পরে পস্তাবে না, ইনশা’আল্লাহ্‌।

 

ইস্তিখারা কেন? ইস্তেখারার নামাজ কেন পড়ে?
কোন মুসলিম যখন কোন মুবাহ কাজ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে চায় তখন সে ইস্তিখারা করবে এই নিয়্যতে যে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য কল্যাণকর কিছুর ব্যবস্থা করে দেবেন। মুবাহ হচ্ছে ঐ সমস্ত কাজ-কর্ম, খাবার-দাবার, ইত্যাদি যা অনুমোদিত বা হালাল, কিন্তু ফরজ/ওয়াজিব না। অর্থাৎ কেউ চাইলে তা করতে পারে, না চাইলে না করতে পারে। এগুলো করতে কেউ বাধ্য নয়। করলে সাধারণত কোন সওয়াব নেই এবং না করলে কোন গুনাহ নেই। এরকম অনেক কিছু করা অনেক সময় জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। তখন সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ইস্তিখারা করতে আমাদের শিখিয়েছেন আল্লাহর নবী (ﷺ)। এই মুবাহ কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে কোন স্কুল-কলেজে পড়া, কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরী-বাকরী করা, কাউকে বিয়ে করা, কোন বিশেষ দেশে, শহরে বা গ্রামে বসতি স্থাপন করা, কোন বিশেষ বস্তু [যেমন গাড়ি] ক্রয় করা, কোন ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করা, ইত্যাদি।

কিছু উদাহরণ দেয়া যাক। ধরেন, আপনি চাচ্ছেন হার্ভার্ডে পড়বেন এবং হতে পারে আপনি চান্সও পেলেন। কিন্তু সে প্রতিষ্ঠানে পড়াটা আপনার দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণকর হবে কিনা আপনি তা জানেন না। তাই আপনি ইস্তিখারা করে সিদ্ধান্ত নেবেন সেখানে যাবেন কী যাবেন না।

বিয়ের জন্য ইস্তেখারা, বিবাহের ক্ষেত্রে ইস্তেখারা? বিয়ে শাদী করার ক্ষেত্রেও। কোন পাত্র বা পাত্রী আপনার জন্য কল্যাণকর হবে তা আল্লাহই জানেন। তাই তাঁর পরামর্শ ও সাহায্য কামনা করবেন ইস্তিখারার মাধ্যমে। আপনি আম্রিকা আসবেন কি আসবেন না সে ব্যাপারেও ইস্তিখারা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। এইভাবে সব ধরণের মুবাহ কাজের ক্ষেত্রে আপনি ইস্তিখারা করবেন।

কোথায় ইস্তিখারা করা যাবে না?
যে কাজ হারাম অথবা যে কাজ ফরজ/ওয়াজিব তাতে কোন ইস্তিখারা নাই। যেমন, যে চাকরির সাথে হারাম জড়িত তা করা না করার জন্য কোন ইস্তিখারা নাই। তাতে অবশ্যই যোগ দেয়া যাবে না। উদাহরন দিই একটা। আপনি সূদী ব্যাংকে চাকরির অফার পেয়েছেন। এখন এখানে যোগ দেবার বা না দেবার জন্য কোন ইস্তিখারা নাই। আপনার এখানে যোগ দেয়াটাই হারাম। একইভাবে কেউ কোন মুসলিম কোন কাফির/মুশরিক নারী/পুরুষকে বিয়ে করবে কি করবে না সেজন্য ইস্তিখারা করবে না। সে অবশ্যই কাফির/মুশরিককে বিয়ে করবে না, কারণ এটা তার জন্য নিষিদ্ধ।
অন্যদিকে যে কাজ করা ফরজ/ওয়াজিব [যা অবশ্যই করতে হবে] তার জন্যও কোন ইস্তিখারা নাই।

ইস্তিখারা কীভাবে?ইস্তেখারার নামাজ নিয়ম
ইস্তেখারার নামাজ এর নিয়ত.ইসতেখারার নামাজ
ইস্তেখারার নামাজ দোয়া.
জাবের বিন আবদুল্লাহ(রা.) বর্ণনা করেন, “রসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে সব বিষয়ে ইস্তিখারা করার শিক্ষা দিতেন; যেভাবে তিনি আমাদের কুরআনের সুরা শিক্ষা দিতেন।” তিনি বলতেন, “তোমাদের কেউ যখন কোনো [মুবাহ] কাজের উদ্যোগ নেয়, তখন সে যেন দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে। অতঃপর বলে:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي ـ أَوْ قَالَ عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ ـ فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي ـ أَوْ قَالَ فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ ـ فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ، وَاقْدُرْ لِي الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ أَرْضِنِي بِهِ‏
“হে আল্লাহ! আমি তোমার ইলমের মাধ্যমে আপনার কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আমি আপনার শক্তির সাহায্যে শক্তি চাইছি এবং আপনার কাছে অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। কেননা, আপনিই ক্ষমতাবান; আর আমি ক্ষমতা রাখি না। আপনি জ্ঞান রাখেন, আমার জ্ঞান নেই এবং আপনি অদৃশ্য বিষয়ে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। হে আল্লাহ! আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ (নিজের প্রয়োজনের নামোল্লেখ করবে অথবা মনে মনে স্মরণ করবে) আমার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য (কিংবা বলবে আমার দ্বীনদারি, জীবন-জীবিকা ও কর্মের পরিণামে) কল্যাণকর হলে, আপনি তা আমার জন্য নির্ধারণ করে দিন। সেটা আমার জন্য সহজ করে দিন এবং তাতে বরকত দিন। হে আল্লাহ! আর যদি আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ আমার দ্বীনদারি, জীবন-জীবিকা ও কর্মের পরিণামে (কিংবা বলবে, আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য) অকল্যাণকর হয়, তবে আপনি আমাকে তা থেকে ফিরিয়ে দিন এবং সেটাকেও আমার থেকে ফিরিয়ে রাখুন। যেখানে আমার জন্য কল্যাণ রয়েছে তা নির্ধারণ করে রাখুন এবং আমাকে সেটার প্রতি সন্তুষ্ট করে দিন।” (বুখারি, হাদিস: ৬৩৮২-৬৮৪১; তিরমিজি, হাদিস: ৬৪৮)

ইস্তেখারার ফলাফল

আপনি যখন কোন মুবাহ কাজের নিয়্যত করবেন অথবা কোন মুবাহ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাবেন তখন উপরে বর্ণিত নিয়মানুযায়ী আমল করবেন। সেটাই ইস্তিখারা। আর এটা শুধু একবারই করবেন না। প্রয়োজনে একই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য একাধিকবার ইস্তিখারা করবেন। ইস্তিখারা করার পর আপনার মন যেদিকে টানে সেদিকে সিদ্ধান্ত নেবেন। ইস্তিখারা দিনের যে কোন সময়ে করা যায়, শুধু নামাজের নিষিদ্ধ সময় ব্যতীত। ইস্তিখারা শেষে আপনাকে স্বপ্ন দেখতে হবে – এমনটা জরূরী নয়।
এটা রসূলুল্লাহ (ﷺ) এর শেখানো একটা বিশেষ সুন্নাহ। যে এর ভিত্তিতে আমল করবে, সে তার কাজের জন্য পস্তাবে না, ইনশা’আল্লাহ্‌।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে DailyResultBD.com ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group