শিক্ষা নিউজ

ভর্তি না হয়েও তিন মাসের টিউশন ফি দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের

ভর্তি না হয়েও তিন মাসের টিউশন ফি দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, একাদশের ক্লাস অক্টোবরে শুরু হলেও তাদের সেশন শুরু হয় জুলাই থেকে। সে হিসেব করেই তাদের বেতন পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা বোর্ড থেকেও একাদশ শ্রেণির সেশন জুলাই থেকেই বলা হয়েছে এবং একজন শিক্ষার্থীকে ২৪ মাসের বেতন পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। সেজন্য তারা এভাবে বেতন নিচ্ছে।

শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা বলছেন, একাদশ শ্রেণিতে তারা ভর্তিই হয়েছেন অক্টোবর মাসে। জুলাই, আগস্ট আর সেপ্টেম্বরে তাদের সাথে কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্কই ছিল না। তবুও তাদের বেতন পরিশোধ করতে বলার বিষয়টি অমানবিক। করোনার কারণে এখন সবাই আর্থিক সংকটে রয়েছে। এই অবস্থায়ও কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন ‘অমানবিক’ আচরণ সহ্য করার মতো না।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, আমরা একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ২৪ মাসের একটা সেশন ধরি। জুলাইয়ের এক তারিখ থেকে এই সেশন শুরু হয়। সেজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো জুলাই মাস থেকে বেতন নিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন না নিলে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারবে না কলেজগুলো- জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা শুধু শিক্ষার্থীদের কথাই বলেন। অথচ আমাদের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের কথা বলেন না। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে জুলাই-আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের বেতন না নিলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের বেতন দেবে কীভাবে?

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর নটরডেম কলেজ, হলিক্রস কলেজ, রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল ও কলেজ, বীর শ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ কলেজ, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল কলেজসহ প্রায় সব কলেজেই একাদশে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের গত জুলাই মাস থেকে বেতন নেয়া হয়েছে। আর ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে গত আগস্ট মাস থেকে টিউশন ফি আদায় করা হয়েছে।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কাছে জুলাই মাস থেকে বেতন নেয়ার কথা অকপটেই স্বীকার করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম। তিনি বলেন, একাদশ শ্রেণির সেশন শুরু হয় জুলাই মাস থেকে। তাই জুলাই থেকেই শিক্ষার্থীদের সেশন ধরা হয়েছে। এখানে অন্যায়ের কিছু দেখছি না। শিক্ষা বোর্ড থেকে সেশন শুরুর নির্দেশনা যেভাবে দেয়া আছে, আমরা সেভাবেই বেতন নিচ্ছি।

করোনার মধ্যেও এভাবে টিউশন ফি আদায় করা কতটা যৌক্তিক- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়। তাদের বেতন আমরা একমাসও বন্ধ রাখিনি। এছাড়া আমরা টিউশন ফি’র জন্য চাপ প্রয়োগ করিনি। যাদের সমস্যা আছে তাদের কাছ থেকে দরখাস্ত নিয়ে টিউশন ফি পরে দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছি।

এদিকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পূর্বেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিগত তিন মাসের বেতন আদায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তারা বলছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো দিক নির্দেশনা না থাকায় কলেজগুলো নিজেদের ইচ্ছেমতো টিউশন ফি আদায় করছে। কলেজগুলোর টিউশন ফি আদায়ের ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলে তারা আর এই সুযোগ পেত না। তাই দ্রুত কলেজের জন্য টিউশন ফির একটি নীতিমালা প্রণয়ন করার দাবি তাদের।

 

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেন, আমরা বরাবরই টিউশন ফি আদায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নমনীয় হওয়ার আহবান জানিয়েছি। একজন শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তি হলো অক্টোবর মাসে, সে কেন জুলাই মাসের বেতন পরিশোধ করতে যাবে। আমাদের কাছে এখনো এমন অভিযোগ আসেনি। তবে লিখিতভাবে কেউ যদি আমাদের কাছে অভিযোগ করে তাহলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। কলেজগুলোর টিউশন ফি আদায়ে নীতিমালা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে DailyResultBD.com ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group