শিক্ষা নিউজ

শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা হতাশ দীর্ঘ সময়েও সনদ না পাওয়ায়

শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা হতাশ দীর্ঘ সময়েও সনদ না পাওয়ায় । শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এজন্য দীর্ঘদিন আগে এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও সনদের অভাবে বেকার থাকা শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা ভীষণ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরাও। দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে এলেও সমস্যা সমাধানে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আনুকূল্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তারা।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নিয়ম অনুসারে, দেশে আইনজীবী হতে হলে আইনের শিক্ষার্থীদের এমসিকিউ, লিখিত ও ভাইভায় উত্তীর্ণ হতে হয়। পরীক্ষার্থীরা কোনও একটি ধাপে প্রথমবার উত্তীর্ণ হলে তাদের মোট দুবার পরবর্তী ধাপের পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়। সে অনুসারে ২০১৭ সালের ৩৪ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে থেকে লিখিত পরীক্ষায় দ্বিতীয় ও শেষবারের মতো বাদ পড়া তিন হাজার ৫৯০ শিক্ষার্থী এবং ২০২০ সালে প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষানবিশ আইনজীবীর মধ্যে এমসিকিউ উত্তীর্ণ আট হাজার ৭৬৪ শিক্ষার্থীসহ মোট ১২ হাজার ৮৫৮ জন সনদ প্রত্যাশী লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন।

আইনজীবী পেশা সারাবিশ্বে একটি সম্মানজনক ও স্বাধীন পেশা হিসেবে সমাদৃত। অথচ সেই আইন বিষয়ে পড়াকে সৌভাগ্য না ভেবে অভিশাপ মনে করছেন শিক্ষানবিশ আইনজীবী শুভদীপ। তিনি বলেন, ‘মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করে এখন নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছে। না আছে কোনও পরিচয়, না আছে পরিবারের প্রতি কোনও অবদান। মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আইন পড়া অভিশাপ। সত্যি বলতে, অসহায়দের নিয়ে ভাবার কেউই নেই। এই অসহায়ত্ব আমি আর আমার পরিবার ছাড়া কেউ বুঝবে না।’

এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছি। তিনি বারের সদস্যদের শিক্ষানবিশদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।’

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাকালে শিক্ষানবিশদের এ সংকটে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে আইনমন্ত্রীর মাধ্যমে বারের নেতৃবৃন্দকে বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। মূলত বার কাউন্সিলের আইনজীবীদের প্রতি সম্মানপূর্বক প্রধানমন্ত্রী যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দায়িত্ব বার নেতৃবৃন্দের ওপর অর্পণ করেছেন বলেও সূত্রটি জানায়।

এদিকে বার কাউন্সিলের কয়েকটি সূত্র থেকে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহের যেকোনও একটি কার্যদিবসে এনরোলমেন্ট কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সে সভায় করোনা বিবেচনায় শুধু ভাইভা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বারে সংক্ষিপ্ত মার্কে লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার প্রসঙ্গে আলোচনা হতে পারে। এরপর যথানিয়মে হবে ভাইভা। আবার লিখিত মওকুফ হবে কিনা সে বিষয়টিও নির্ভর করছে কমিটির ওই সভার সিদ্ধান্তের ওপর। একই সঙ্গে লিখিত কিংবা ভাইভা, যে পরীক্ষাই হোক না কেন সে বিষয়টি দ্রুত নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।

সূত্র জানায়, দীর্ঘ বিরতি দিয়ে পরীক্ষা হওয়ার কারণে বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা ১২০ দিনের অধিক সময় ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন করছেন। শিক্ষার্থীদের সেসব দাবির প্রতি বার কাউন্সিলের নির্বাচিত ১৪ সদস্যের কয়েকজন সরাসরি ভাইভা নেওয়ার পক্ষে মত দিলেও অধিকাংশই লিখিত পরীক্ষার পর ভাইভার পক্ষে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছেন। তবে করোনার মধ্যে এনরোলমেন্ট কমিটি শুধু ভাইভার সিদ্ধান্ত নিলে সেখানে হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই বলেও জানা গেছে।

শিক্ষানবিশ আইনজীবী মো. রায়হান বলেন, ‘প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষানবিশ ১২০ দিনের অধিক সময় ধরে রাজপথে আন্দোলনরত আছেন। এটা জাতির জন্য লজ্জার। বার কাউন্সিলের নিয়ম অনুসারে বছরে দুটো পরীক্ষা নিলে তিন বছরে ছয়টা পরীক্ষায় কমপক্ষে ২০ হাজার আইনজীবী তালিকাভুক্ত হতেন। কিংবা আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি ক্যালেন্ডার ইয়ারে পরীক্ষা নিলেও তিন বছরে প্রায় ২০ হাজার আইনজীবী তালিকাভুক্ত হতে পারতেন।’

শিক্ষানবিশদের দুরবস্থার বিষয়গুলো নজরে আনার পর অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আমরা খুব শিগগিরই এনরোলমেন্ট কমিটির সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা করবো।’

বাংলা ট্রিবিউন

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে DailyResultBD.com ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group