তৃতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিশুদের মাত্র ৩৪ শতাংশ পড়তে পারে
তৃতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিশুদের মাত্র ৩৪ শতাংশ পড়তে পারে। এই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র ১৮ শতাংশের গুণতে পারার প্রাথমিক দক্ষতা আছে। এক্ষেত্রে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অবস্থা আরও খারাপ।
আজ বুবধার ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। ‘শিশুরা কি সত্যিই শিখছে?’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে ৩২টি দেশ ও অঞ্চলের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাতে মহামারির আগে ও দুই বছর পর স্কুল থেকে ঝরে পড়া ও শিখন ঘাটতির কথা তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘মহামারির আগেও বাংলাদেশের শিশুরা পড়াশোনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছিল। কোভিডে বাংলাদেশের শিশুদের পড়াশোনায় যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এখনই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে তা পরবর্তী প্রজন্মের শিশু ও তাদের পরিবারের সামগ্রিক কল্যাণকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।’
ইউনিসেফ বলেছে, বাংলাদেশে ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এবং আবার ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্কুল বন্ধ থাকায় প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ শিশুর পড়তে ও গুণতে পারার প্রাথমিক দক্ষতার ঘাটতি উদ্বেগজনক মাত্রায় বেড়েছে। যদিও এই ঘাটতি মহামারির আগেও ছিল।
প্রতিবেদনে, পড়তে পারার দক্ষতা বিচারে গত এক বছরে স্কুল থেকে ঝরে পড়া এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া শিশুদের দক্ষতায় উল্লেখযোগ্য পার্থক্য দেখা গেছে। ঝরে পড়া শিশুদের মাত্র ২৯ শতাংশের পড়তে পারার প্রাথমিক দক্ষতা রয়েছে, যেখানে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া শিশুদের মধ্যে এই হার ৩৯ শতাংশ।
যে ৩২টি দেশ ও অঞ্চলের উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে সেখানে শেখার বর্তমান গতি এতটাই ধীর যে বেশিরভাগ স্কুলগামী শিশুর পড়তে পারার প্রাথমিক দক্ষতা অর্জনে ৭ বছর লাগতে পারে, যে দক্ষতা সাধারণত ২ বছরেই অর্জন করা যায় এবং প্রাথমিক পর্যায়ের গাণিতিক দক্ষতা অর্জনে ১১ বছর লাগতে পারে। প্রায় ১৪ বছর বয়সী অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এক চতুর্থাংশের পড়তে পারার প্রাথমিক দক্ষতা ছিল না। অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থীর ছিল না গাণিতিক দক্ষতা যা জসাধারণত ৭ বছর বয়সী বা দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের থাকার কথা।