শিক্ষা নিউজ

সোনার তরী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

সোনার তরী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সোনার তরী কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সোনার তরী কাব্যগ্রন্থের নাম কবিতা।

সৃজনশীল প্রশ্ন ১:

উদ্দীপক-১: জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে, চিরস্থির কবে নীর, হায়রে জীবন নদে।

উদ্দীপক-২: সেই ধন্য নরকুলে, লোকে যারে নাহি ভুলে, মনের মন্দিরে সদা সেবে সর্বজন।

ক. ‘সোনার তরী’ কবিতায় উল্লিখিত মাঝি কীসের প্রতীক?

খ. ‘আমারি সোনার ধানে গিয়াছে ভরি’— এ উক্তির তাৎপর্য ব্যখ্যা করো।

গ. উদ্দীপক-১ এর সঙ্গে ‘সোনার তরী’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা করো।

ঘ. “উদ্দীপক-২ এর চেতনা যেন ‘সোনার তরী’ কবিতার মূল চেতনাকেই ধারণ করে আছে।”— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো। ৪
১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘সোনার তরী’ কবিতায় উল্লিখিত মাঝি মহাকালের প্রতীক।

খ. প্রশ্নোক্ত উদ্ভিটির মধ্য দিয়ে কৃষকের কর্মফল সোনার ধানে মহাকালের তরী পরিপূর্ণ হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

‘সোনার তরী’ একটি রূপক কবিতা। এ কবিতায় কৃষকরূপী শিল্পস্রষ্টা কবি তাঁর সৃষ্টিকর্ম সোনার ধান নিয়ে মহাকালরূপী তরীর প্রতীক্ষায় ছিলেন । তরী আসার পর ধানরূপী তাঁর সমস্ত কর্ম সেখানে তুলে দেন। এ সময় তিনি উপলব্ধি করেন তাঁরই কর্মের ভারে পূর্ণ তরীতে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার মতো স্থান অবশিষ্ট নেই। অর্থাৎ তরীরূপী মহাকাল শুধু ফসল অর্থাৎ মানুষের কর্মকেই গ্রহণ করবে, ব্যক্তি মানুষকে নয়। প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে এ বিষয়টিই তাৎপর্যময় হয়ে উঠেছে।

গ. উদ্দীপক-১ এ ‘সোনার তরী’ কবিতায় প্রকাশিত কবির মৃত্যুচেতনার দিকটির সাদৃশ্য ফুটে উঠেছে।

টর্ট আইন

আলোচ্য কবিতায় নিবিড়ভাবে মিশে আছে কবির জীবনদর্শন। এ কবিতায় কবি দেখিয়েছেন, মহাকালের স্রোতে মানুষের জীবন যৌবন ভেসে যায়, কিন্তু বেঁচে থাকে মানুষের সৃষ্টিকর্ম। মানুষের কর্ম পৃথিবীতে স্থান লাভ করলেও তার ব্যক্তিসত্তা ও শারীরিক অস্তিত্বকে নিশ্চিতভাবে হতে হয় মহাকালের নিষ্ঠুর কালগ্রাসের শিকার। অর্থাৎ মানুষের মৃত্যুর অনিবার্যতার কথাই এখানে উঠে এসেছে।

উদ্দীপক-১ এর কবিতাংশে মৃত্যু নিয়ে কবির উপলব্ধির কথা প্রকাশিত হয়েছে। এখানে মৃত্যুর কাছে মানুষের অসহাত্বের দিকটি উঠে এসেছে। জীবনকে তুলনা করা হয়েছে একটি নদীর সঙ্গে, যার পানি কখনো স্থির থাকে না। প্রতিটি জীবকেই জন্মগ্রহণ করলে যে মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে সেই সত্যই এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে মৃত্যুর অনিবার্যতার পাশাপাশি এর কাছে মানুষের অসহাত্বের দিকটিও প্রকাশ পেয়েছে। যেমনটি প্রকাশ পেয়েছে ‘সোনার তরী’ কবিতার কবির ভাবনায়। আলোচ্য কবিতায় মহাকালের স্রোতে ব্যক্তিমানুষের বিলীন। হওয়ার কথাতে এ বিষয়টিই মূর্ত হয়ে উঠেছে। সুতরাং উদ্দীপক-১ এ ‘সোনার তরী’ কবিতায় প্রকাশিত কবির মৃত্যুচেতনার দিকটির সাদৃশ্য ফুটে উঠেছে।

ঘ. উদ্দীপক-২ এর কবিতাংশে ব্যক্তির কর্মের মাধ্যমে মানুষের মনে অমরত্ব লাভের দিকটি উঠে এসেছে, যা ‘সোনার তরী’ কবিতার মূল চেতনাকেই তুলে ধরে।

‘সোনার তরী’ কবিতায় কবি তাঁর এক গভীর জীবনদর্শন আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন, মহাকালের স্রোতে মানুষকে একদিন বিলীন হতে ববেই; কিন্তু তার কৃতকর্মের কোনো বিনাশ নেই। অর্থাৎ মানুষ মরণশীল হলেও তার সৃষ্ট কর্ম অবিনশ্বর। রূপকের আড়ালে কবি আমাদের এই সত্যই বলতে চেয়েছেন।

উদ্দীপক-২ এর কবিতাংশে কবি আমাদের সামনে অমরত্ব লাভের উপায় বাতলে দিয়েছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন, সেই সকল মানুষের জীবন ধন্য যাঁরা মৃত্যুবরণ করলেও তাঁদের মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। মানুষের মনের মধ্যে তাঁরা সবসময় সম্মানের সাথে বিরাজ করে। ঠিক এমনই এক সত্যের সন্ধান আমরা পাই ‘সোনার তরী’ কবিতায়।

‘সোনার তরী’ কবিতায় কবির যে জীবনদর্শন প্রকাশ পেয়েছে তা হলো। ব্যক্তিমানুষের পৃথিবীতে টিকে থাকা সম্ভব না হলেও তার মহৎ কর্ম টিকে থাকে। অর্থাৎ মহৎ সৃষ্টিকর্ম কালের খেয়াতে স্থান পেলেও স্রষ্টাকে অতৃপ্তির বেদনা নিয়ে অপেক্ষা করতে হয় মহাকালের স্রোতে বিলীন হওয়ার জন্য। মানুষকে তার কর্মময় জীবনের সকল অর্জন ফেলে একদিন মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে হয়। পৃথিবীতে তার অর্জিত কর্মই টিকে থাকে। একইভাবে উদ্দীপক-২ এর কবিতাংশে মানুষের মাঝে অমরত্ব লাভের দিকটি উঠে এসেছে। এখানে কবি সেই সমস্ত ব্যক্তির জীবনকে ধন্য বলেছেন যাদের মৃত্যুর পরেও মানুষ ভুলে না। অর্থাৎ পৃথিবীতে তারা বেঁচে না থাকলেও তাদের সৃষ্টিকর্মই তাদের বাঁচিয়ে রাখে। সে বিবেচনায় প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটিকে যথার্থই বলা যায়।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে DailyResultBD.com ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group