দেশের সব সরকারি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীভুক্তের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক বলেছেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারাদেশের স্নাতক পর্যায়ের সকল সরকারি কলেজকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা হচ্ছে। এতে করে তাদের পড়াশোনার মান বৃদ্ধি পাবে।
মঙ্গলবার (৩১ মে) রাজধানীর ঢাকা কলেজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন সারাদেশের অনার্স পর্যায়ের সরকারি যতগুলো কলেজ রয়েছে সেগুলোকে স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। বর্তমানে যেমন ঢাকা বিভাগের সাতটি সরকারি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছে। তেমনি চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি কলেজ গুলোকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশেই এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিয়ে আসলে শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারি কলেজ গুলোর শিক্ষার মান তদারকি করতে পারবেন। আর এখন সারাদেশে এত সরকারি কলেজ যে সেগুলোকে ঢাকা থেকে পরিচালনা করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন কলেজগুলোকে স্থানীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার। এটাকে লক্ষ্য রেখেই প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে জেলা পর্যায়ে আরো অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করছেন। এছাড়াও ঢাকা কলেজ নিয়ে সরকারের মাস্টার প্ল্যান রয়েছে বলেও জানান তিনি।
Read more- বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হচ্ছে দেশের সব সরকারি কলেজ, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ানো যাবে না। সেই সঙ্গে দেশের সব জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ওই অঞ্চলের কলেজগুলো অধীভুক্ত করতে হবে বলে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।
একনেক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার কথা জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ হাজার, ৬০ হাজার শিক্ষার্থী। উনি বলেছেন, এটা কীভাবে হতে পারে! এটা হয় নাকি কোথাও! শিক্ষার্থীরা আসছেই, ভর্তি হচ্ছেই, দে আর সুডবি লিমিট।
শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ঠিক করবেন, কতজন শিক্ষার্থী হতে পারে। ছাত্রছাত্রী বাড়ানো যাবে না। আনলিমিটেড নাম্বার স্টুডেন্ট নট অ্যালাউড।’শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি এ বিষয়ে কাজ করবেন বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
এছাড়া দেশের সব সরকারি কলেজ সংশ্লিষ্ট এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘যেসব নতুন বিশ্ববিদ্যালয় আমরা বানাচ্ছি; আশা করি সুনামগঞ্জে নতুন একটা বিশ্ববিদ্যালয় হবে অচিরেই। ধরুন হলো, এর আওতায় যে কয়েকটি সরকারি কলেজ আছে, এর সঙ্গে অধীভুক্ত হবে। সরকারি কলেজগুলো বিশ্ববিদ্যালয়টির অংশ হয়ে যাবে। যেমন- ঢাকায় আছে (৭ কলেজ)। এটা সারাদেশেই করা হবে।’
এর আগে ২০১৪ সালের ৩১ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গেলে সব স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সরকারি কলেজগুলোকে আঞ্চলিক পাবলিক কলেজগুলোর অধীনে নেয়ার অনুশাসন দেন। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে নানা কৌশল করে। তারা ক্রাশ প্রোগামের নামে শিক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষার্থী বানিয়ে ফেলছে। একক পরীক্ষক পদ্ধতি চালু করেছে। অবশেষে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার সাতটি কলেজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হস্তান্তর করে। কিন্তু ফলাফলসহ নানা বিষয়ে ঝামেলা তৈরি ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উসকানি দিয়ে রাস্তায় নামানো হয়।
মাঠ, গবেষণাগার, গ্রন্থাগার প্রচুর পরিমাণে করার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একনেক সভায় রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের মাঠ নিয়েও কথা হয়েছে একনেক বৈঠকে। এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ হলো, তিতুমীর কলেজের মাঠ, মাঠই থাকবে। মাঠ যেন কেউ নিতে না পারে।’
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ।