স্নাতক শেষ বর্ষের পরীক্ষা গ্রহণের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা
স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্নাতক শেষ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণের দাবিতে আবারও প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেছে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন তালাবদ্ধ করে ভাইস-চ্যান্সেলরের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন।
জানা গেছে, এরই মধ্যে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. খালেদ হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক, সহকারী প্রক্টর, সহকারী পরিচালক নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে তালা ভেঙ্গে প্রশাসনিক ভবনের গেট খুলতে চাইলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বাঁধা প্রদান দেন।
এতে করে প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাক-বিতন্ডা সৃষ্টি হয়। এ সময় বহিস্কার, ছাত্রত্ব বাতিল করার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিও বার্তায় এ ধরনের বিষয় দেখা গেছে। তবে যদিও সন্ধ্যা ৬টার দিকে দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে প্রশাসনিক ভবনের তালা খুলে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
মারুফ হাসান নামে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানবন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিলো আজ রবিবার (৮ নভেম্বর) পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। সেজন্য আমরা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
মারুফ বলেন, এ অবস্থায় কোন সিদ্ধান্ত না আসায় আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দিয়েছি এবং আমরা অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখি।
‘‘এদিকে আজ রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ভিসি স্যার ১৫ তারিখের মধ্যে আমাদের বিষয়ে অফিসিয়ালি/আন অফিসিয়ালি সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে আশ্বস্ত করলেও আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করি’’ মারুফ বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. খালেদ হোসেন জানান, প্রশাসনিক ভবনে তালা দেয়ার এখতিয়ার শিক্ষার্থীদের নেই। এরপরেও তাঁরা যেহতু তালা দিয়েছে সেটাই আমি খুলে দিতে বলেছি। মন্ত্রণালয় বা ইউজিসি থেকে যেহেতু পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত আসেনি বা ভিসি স্যার আমাদের কিছু জানায়নি তাই নিজে থেকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তের কথা আমি বলতে পারি না।
তিন বলেন, তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভিসি স্যারের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছেন- তিনি আগামী ১৫ তারিখ মধ্যে অফিসিয়ালি/আন অফিসিয়ালি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাতে চেয়েছেন। স্যারের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. ফজলুল হক জানিয়েছিলেন, পরীক্ষার বিষয়টি একাডেমিক তাই বিষয়গুলো স্ব-স্ব অনুষদের ডিনগণ দেখবেন। শিক্ষার্থীরা ডিনের কাছে যাবে এবং ডিন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখাসহ সংশ্লিষ্ট অফিসে জানাবে। সরকার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার দিকে জোর দিচ্ছে। সরকারসহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও পরীক্ষার বিষয়ে আন্তরিক। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির নির্দেশনা পেলে আমরা পরীক্ষা নিতে প্রস্তুত আছি।