ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট ড. জাহাঙ্গীর কবির

ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট ড. জাহাঙ্গীর কবির বিভিন্ন ধরনের ডাক্তারি পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, ওজন এবং শ্বাসকষ্ট রোগের দূর করার উপায়

ড. জাহাঙ্গীরের মতে, ২৫ শতাংশ প্রোটিন, ৫ শতাংশ কার্ব ও ৭০ শতাংশ ফ্যাটই হলো কিটো ডায়েটের সঠিক অনুপাত। সকালের নাস্তা অবশ্যই দেরি করে খাওয়া উচিত। অর্থাৎ (ফাস্টিং পিরিয়ড) না খেয়ে থাকার সময়টা বাড়াতে হবে। সেইসঙ্গে সয়াবিন বা সরিষার তেলের বদলে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল অথবা কোকোনাট অয়েল ব্যবহার করতে হবে। মাখনও ব্যবহার করতে পারেন। অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ( অর্গ্যানিক উইথ দ্য মাদার) অবশ্যই প্রতিদিন পান করতে হবে নিয়ম করে।

ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট ড. জাহাঙ্গীর কবির

তার পরামর্শ অনুযায়ী একটি কিটোজেনিক ডায়েট চার্ট আপনাদেরকে জানানো হলো। কিটো সম্পর্কে এক কথায় বলতে গেলে এই ডায়েট চলাকালীন সময় শর্করাজাতীয় খাবার কম খেয়ে বরং চর্বিজাতীয় খাবারকে প্রাধ্যন্য দেয়া হয়। এই ডায়েট চার্ট অনুসরণ করলে এক মাসে অন্তত ১৫ থেকে ১৭ কেজি ওজন কমবে। জেনে নিন সারাদিনের ডায়েট চার্ট-

সকালের নাস্তা

১. সকালে ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামাজ আদায় করে আধা ঘণ্টা হাঁটবেন কিংবা ওয়ার্কআউট করবেন। এক ঘণ্টা ব্যায়াম করতে পারলে ফলাফল আরো ভালো পাবেন।

২. ঠিক সকাল ৮ টার সময় এক মগ বুলেট কফি পান করুন। বুলেট কফি যেভাবে তৈরি করবেন-

উপকরণ: এক চামচ কফি পাউডার, এক চামচ এক্সট্রা ভার্জিন কোকোনাট অয়েল ও এক চামচ মাখন।
প্রণালী: প্রথমে মগে এক চামচ কফি পাউডার নিন। এবার সামান্য পানি নিয়ে ভালো করে মিশ্রণটি তৈরি করুন। অতঃপর সামান্য উপর থেকে মগে পানি ঢালুন। এরপর কোকোনাট অয়েল ও মাখন মিশিয়ে নিন। এরপর পান করুন।

৩. সকাল ১১ টার সময় মাখন দিয়ে দুইটি ডিম পোচ করে নিন। সঙ্গে এক মুঠো বাদাম ওই মাখনেই সামান্য হিমালয়ান পিঙ্ক সল্ট দিয়ে ভেজে নিন। এটাই সকালের নাস্তা। এর বিকল্প হিসেবে ডিমের সঙ্গে টমেটো মিশিয়ে অমলেটও বানাতে পারেন।

দুপুরের খাবার

১. দুপুরের খাবারের পূর্বে ২টার দিকে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার পান করুন। এজন্য হালকা গরম পানিতে এক টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার (অর্গেনিক উইথ দ্য মাদার) মিশিয়ে পান করুন।

২. এর দশ থেকে ১৫ মিনিট পরেই করুন লাঞ্চ। এজন্য শাক-বা সবজি পেঁয়াজ মরিচ এমনকি মশলা দিয়ে ভেজে নিতে পারেন। সঙ্গে যেকোনো মাছও থাকতে পারে। তবে অবশ্যই রান্নায় এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে হবে।

৩. কিটোজেনিক ডায়েটে প্রচুর পানি পান করতে হবে। এজন্য অবশ্যই প্রতিবার পানি পান করার সময় সামান্য হিমালয়ান পিঙ্ক সল্ট ব্যবহার করতে হবে। দিনে অন্তত ৪ থেকে ৫ লিটার পানি পান করুন।

বিকেলের নাস্তা

বিকেল ৫টার সময় এক বাটি শসা খান। সঙ্গে এক কাপ গ্রিন টি খেতে ভুলবেন না যেন! এক মুঠো বাদামও খেতে পারেন।

রাতের খাবার

১. রাত ৮ টার মধ্যেই ডিনার সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য দুই পিস মুরগির মাংস ভেজে নিতে পারেন। আবার মাছও খেতে পারেন। সঙ্গে নিন একটি শসা ও গাজর। আপনারা অবশ্যই খাবারগুলো অদল বদল করে খেতে পারেন। এতে একঘেয়েমি আসবে না।

২. রাতের খাবারে সবজি খেতে পারেন। এক বাটি সবজির সঙ্গে এক পিস মাংসও খাওয়া যেতে পারে। তবে ভুলেও এই ডায়েট চলাকালীন সময় ভাত খাবেন না। কারণ কিটো ডায়েটে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অনেক কম থাকে। আর তাই দ্রুত ওজন বশে আনা সম্ভব হয়।

সতর্কতা-

১. অবশ্যই কিটো ডায়েট তিন মাসের বেশি করা যাবে না। তিন মাস ডায়েটের পর সাধারণভাবেই অল্প খেয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। কিছুদিন পর আবারো এই ডায়েট চার্ট মেনে চলুন।

২. কিটো ডায়েট এক সপ্তাহের জন্য করা যেতে পারে। এজন্য একইভাবে সাত দিন ডায়েট করুন। অতঃপর দুই দিনের জন্য বিরতি নিন। এই দুই দিন মাত্র চার ঘণ্টা খাওয়ার সুযোগ পাবেন। বাকি ২০ ঘণ্টা উপোস থাকতে হবে। এসময় শুধু পানি পান করা যাবে। এছাড়া গ্রিন টি ও ব্ল্যাক কফিও পান করতে পারেন। পারলে এই দুই দিন রোজা রাখতে পারেন। এজন্য সেহরির সময় শুধু হিমালয়ান পিঙ্ক সল্ট মিশ্রিত পানি পান করতে হবে। রোজা রাখলে ইফতারের সময় পাতে রাখুন- ডাবের পানি, ভিনেগার মিশ্রিত পানি, ব্ল্যাক কফি, গ্রিন টি, মাছ, ডিম, বাদাম, কিংবা সবজি। পরে আবারো এই ডায়েট এক সপ্তাহের জন্য মেনে চলুন।

এবার জেনে নিন ওজন কমানোর বিশেষ পরামর্শ। যা ডায়েটের পাশাপাশি মানতে হবে-

১. কার্বোহাইড্রেট ফুডস যেমন- ভাত, রুটি, আলু এমনকি গম বা ময়দা থেকে প্রস্তুতকৃত কোনো খাবার, বিস্কুট, মুড়ি ইত্যাদি খাওয়া যাবে না।

২. এই ডায়েট চলাকালীন সময় মিষ্টি, দুধ, কলা, খেঁজুর এমনকি কোনো মিষ্টিজাতীয় ফলও খাওয়া যাবে না।

৩. কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত শাক-সবজি খেতে হবে। প্রতিবার খাওয়ার পূর্বে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার পান করুন।

৪. প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শসা, গাজর ও টমেটো রাখুন।

৫. প্রোটিনযুক্ত খাবারের মধ্যে রাখুন- ডিম, যেকোনো মাছ, মুরগির মাংস ও বাদাম।

৬. ডাবের পানিও পান করতে পারেন প্রতিদিন। দেরি করে সকালের নাস্তা এবং তাড়াতাড়ি রাতের খাবার শেষ করতে হবে।

৭. দিনে অন্তত দুই বেলার খাবার নির্ধারিত সময়ে খেতে হবে। বেলা ১১ টা থেকে ১২ টা ও সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ৮ টার মধ্যে খাবার খাওয়াই উত্তম।

৮. অবশ্যই রাত ১০ টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ুন।

৯. সেইসঙ্গে মানসিকভাবে সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্ট করুন। দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলতে হবে।

১০. ক্ষুধা লাগলে পানি, গ্রিন টি, ফল কিংবা শসা খেতে পারেন। তবে অল্প পরিমাণে।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে DailyResultBD.com ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group