এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার সময় ও নম্বর বিভাজন যেভাবে
চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীদের প্রতি বিষয়ে ৩২ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে শিক্ষার্থীদের। এরমধ্যে রচনামূলকে ২০ নম্বর ও নৈর্ব্যত্তিকে থাকবে ১২ নম্বর। আর মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ৪৫ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এরমধ্যে ৩০ নম্বর রচনামূলক পরীক্ষা ও ১৫ নম্বরের নৈর্ব্যাত্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। রচনামূলক ও নৈব্যাক্তিকের নম্বরকে ১০০ নম্বরে রূপান্তর করে প্রাপ্ত নম্বরে রূপান্তর করে প্রাপ্ত নম্বর নির্ধারণ করা হবে।
এসব তথ্য জানিয়ে রোববার (১০ অক্টোবর) এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার সময় ও নম্বর বিভাজন প্রকাশ করেছে ঢাকা বোর্ড।
এসএসসির নম্বর বিভাজন যেভাবে :
ঢাকা বোর্ড প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার নম্বর বিভাজন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, উচ্চতরগণিত ও জীববিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষায় রচনামূলক অংশে শিক্ষার্থীদের মোট ৩২ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এরমধ্যে রচনামূলকে ২০ নম্বর ও নৈর্ব্যত্তিকে ১২ নম্বরের পরীক্ষা হবে।
বিজ্ঞান বিভাগেরর বিষয়গুলোতে রচনামূলক অংশে ৮টি প্রশ্ন থাকলেও যেকোন দুইটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। নম্বর ১০ করে ২০। আর নৈর্ব্যত্তিকে ২৫ টি প্রশ্নের মধ্যে ১২টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। নৈর্ব্যাক্তিকে নম্বর ১২। এ ৩১ নম্বরে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের।
বোর্ড বলছে, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ২০ নম্বরকে ৫০ নম্বরে ও নৈর্ব্যত্তিকের ১২ নম্বরকে ১৫ নম্বরে রূপান্তর করে শিক্ষার্থীদের মোট নম্বর নির্ধারণ করা হবে।
এদিকে এসএসসির মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের মোট পরীক্ষার হবে ৪৫ নম্বরের। রচনামূলক অংশে ৩০ নম্বর ও নৈর্ব্যত্তিকে ১৫ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এরমধ্যে রচনামূলক অংশে মোট ১১টি প্রশ্ন থাকলেও উত্তর করতে হবে যেকোন তিনটি প্রশ্ন। প্রতিটির মান ১০ নম্বর। আর নৈর্ব্যত্তিকে ৩০টি প্রশ্ন থাকলেও উত্তর দিতে হবে ১৫টি প্রশ্নের। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য ১ নম্বর করে মোট নম্বর ১৫।
বোর্ড জানিয়েছে, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের ৩০ নম্বরকে ৭০ নম্বরে ও নৈর্ব্যত্তিকের ১৫ নম্বরকে ৩০ নম্বরে রূপান্তর করে শিক্ষার্থীদের মোট নম্বর নির্ধারণ করা হবে।
প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষা হবে ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট। এর মধ্যে রচনামূলকে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ও নৈর্ব্যত্তিকের জন্য সময় থাকবে ১৫ মিনিট।
এইচএসসির নম্বর বিভাজন যেভাবে :
এইচএসসি পরীক্ষার নম্বর বিভাজন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিজ্ঞান বিভাগের প্রতি পত্রের পরীক্ষা হবে মোট ৩২ নম্বরে। এরমধ্যে রচনামূলকে ২০ ও নৈব্যাক্তিকে থাকবে ১২ নম্বর। রচনামূলক অংশে প্রতিটি পত্রে মোট ৮টি প্রশ্ন থাকবে। এরমধ্যে ২টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। প্রতিটিতে ১০ নম্বর। আর নৈর্ব্যত্তিকে ২৫টি প্রশ্ন থাকবে, এরমধ্যে উত্তর করতে হবে ১২টির। প্রতিটির মান ১ নম্বর।
বোর্ড বলছে, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ২০ নম্বরকে ৫০ নম্বরে ও নৈর্ব্যত্তিকের ১২ নম্বরকে ১৫ নম্বরে রূপান্তর করে শিক্ষার্থীদের মোট নম্বর নির্ধারণ করা হবে।
আর মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রতিটি পত্রের মোট পরীক্ষা হবে ৪৫ নম্বরে। এর মধ্যে রচনামূলকে থাকবে ৩০ নম্বর আর নৈর্ব্যত্তিকে থাকছে ১৫ নম্বর। রচনামূলক অংশে ১১টি প্রশ্ন থাকলেও উত্তর করতে হবে ৩টি প্রশ্নের। প্রতিটিতে ১০ নম্বর। আর নৈর্ব্যত্তিকে ৩০টি প্রশ্নের মধ্যে উত্তর করতে হবে ১৫টির। প্রতিটির মান ১ নম্বর।
মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের ৩০ নম্বরকে ৭০ নম্বরে ও নৈর্ব্যত্তিকের ১৫ নম্বরকে ৩০ নম্বরে রূপান্তর করে শিক্ষার্থীদের মোট নম্বর নির্ধারণ করা হবে।
আগামী নভেম্বরে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শুক্রবার চাঁদপুরে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হতে পারে। এছাড়া আগামী নভেম্বরে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে।
তবে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলাসংক্রান্ত বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিংয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। এর আগে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের সব মেডিকেল কলেজ খুলবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি থাকায় শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে সরকার ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। পরে কয়েক দফা চেষ্টা করেও এই মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আর খোলা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে।
চলমান এই ছুটি আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। সে অনুযায়ী, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলমান ছুটি অব্যাহত থাকবে।
সম্প্রতি সচিব সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার নির্দেশ দেন। এর পর থেকেই জোরেশোরে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন সংশ্লিষ্টরা।
ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর এসএসসিতে ৬০ কর্মদিবস এবং এইচএসসিতে সর্বোচ্চ ৮০ কর্মদিবস ক্লাস করানোর পরিকল্পনা করে এবারের সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে।
এদিকে, এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ফের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত এই সিলেবাস গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশ করে সব শিক্ষা বোর্ড। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি এসএসসির সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করার পর তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার এনসিটিবিতে আয়োজিত এক সভায় আন্ত শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির কাছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস জমা দেওয়া হয়। এনসিটিবির পক্ষ থেকে আন্ত শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহল আহমেদ সিলেবাসটি গ্রহণ করেন। এরপর সব বোর্ডের কাছে সেগুলো পাঠানো হয় এবং রাতেই তা প্রকাশ করা হয়।
এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা জানান, যেটুকু না পড়লেই না নয়, শুধু সেটুকু অধ্যায় দিয়েই নতুন করে বিষয়ভিত্তিক সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। ছোট হওয়া সিলেবাসে সব বিষয়েই প্রশ্নের বিভাজন ও নম্বর কাঠামো ঠিকই থাকবে। অর্থাৎ যে সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে সেখান থেকেই প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে। তবে ইংরেজি বিষয়ে প্রশ্নের কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে ইংরেজির গ্রামার অংশের ন্যারেশন, বাক্য গঠনসহ বেশ কিছু অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইংরেজিতে রচনাও লিখতে হবে না।
প্রতিটি বিষয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ অধ্যায় নির্বাচন করে সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে।