শিক্ষা নিউজ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাস পরিচালনা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেওয়া হলে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস পরিচালনা করতে হবে। প্রতিটি শ্রেণিতে শিফট করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনতে হবে। কোনও শিক্ষার্থী আগ্রহ প্রকাশ না করলে দূরশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।প্রত্যেক শিক্ষার্থীর তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাস পরিচালনা করতে হবে। একইসঙ্গে বেঞ্চের একটি করে কলাম বাদ রেখে (৩ ফুট দূরত্বে) শিক্ষার্থীদের ক্লাসে বসাতে হবে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীর মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) রাতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর দেশের স্কুল, কলেজ, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরভুক্ত উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করার গাইড লাইনে এসব নির্দেশনা দেয়। এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনায় বলা হয়, আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতষ্ঠানকে তাদের শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পাওয়া মাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া যায়।

গাইডলাইনে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারিকৃত নির্দেশনা এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনেস্কো, ইউনিসেফ, বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক নির্দেশনা অনুসরণ করে এই নির্দেশনাটি প্রণয়ন করা হয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে যে ব্যবস্থা নিতে হবে

১) প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের সময় সংশ্লিষ্ট সবার (শিক্ষক, শিক্ষার্থী, স্টাফ, পরিচ্ছন্নতাকর্মী) স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। যেমন: কন্টাক্টলেস থার্মোমিটার স্থাপন ও প্রতিদিনের তথ্য সংরক্ষণের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

২) সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করা। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনে তিন স্তরবিশিষ্ট মাস্ক তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও নির্দেশনা প্রদানের পরিকল্পনা করতে হবে।

৩) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করার বিষয়ে শিক্ষক ও স্টাফদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা করতে হবে। (প্রশিক্ষণে যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে তা হলো: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি, শারীরিক দূরত্বের বিধি, হাত ধোয়ার সঠিক নিয়ম, মাস্ক পরার নিয়ম, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার, কফ ও থুথু ফেলার শিষ্টাচার ইত্যাদি)।

৪) স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুকরণের পরিকল্পনা করতে হবে।

৫) স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের সহায়তায় কোভিড-১৯ সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ ভাষায় প্রস্তুতকরণ ও নিয়মিত হালনাগাদকরণের পরিকল্পনা।

৬) শিক্ষার্থীরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মোতাবেক শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষাকার্যক্রমে অংশ নিতে পারে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলাফেরা করতে পারে এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার পরিকল্পনা গ্রহণ।

এদিকে নিরাপদভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির (শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর) সংখ্যা নিরূপণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করতে যা করতে হবে

১) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা, অবকাঠামো এবং ভৌত সুবিধাদির ম্যাপিং করে স্বাস্থ্যবিধি বিবেচনায় রেখে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।

২) স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে একইসঙ্গে বা একই শিফটে সর্বোচ্চ কতজন শিক্ষার্থীকে একত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনা সম্ভব হবে, সবাইকে একইসঙ্গে আনা সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে সবার শিক্ষা নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।

৩) স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আসন ব্যবস্থা কেমন হবে এবং কতজন শিক্ষার্থীকে একই শিফটে এনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে, তা পরিকল্পনা করতে হবে।

৪) গাইড লাইনে দেওয়া চিত্র অনুসরণ করে, শ্রেণিকক্ষের আয়তন ও সংখ্যা অনুপাতে শ্রেণিভিত্তিক কতজন শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনা যাবে তার সম্ভাব্য সংখ্যা নির্ধারণ করে পরিকল্পনা নিতে হবে।

উদাহরণ দিয়ে গাইড লাইনে বলা হয়, একটি শ্রেণিকক্ষে দুটি কলামে ৫টি করে মোট ১০টি বেঞ্চ/ডেস্ক আছে এবং ডেস্ক/বেঞ্চগুলোর দৈর্ঘ্য ৫ ফুটের কম। যেহেতু ডেস্ক/বেঞ্চগুলোর দৈর্ঘ্য ৫ ফুটের কম, সেহেতু প্রতিটি বেঞ্চে একজন করে মোট ৬ জন শিক্ষার্থী একসঙ্গে একটি ক্লাশে অংশ নিতে পারবে।

প্রতিটি কলামে দ্বিতীয় ও চতুর্থ বেঞ্চ দুটো সরিয়ে ফেলে প্রথম, তৃতীয় ও পঞ্চম বেঞ্চে কমপক্ষে একটি বেঞ্চ অন্তর অন্তর তিন ফুট দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। যদি বেঞ্চগুলো সরিয়ে ফেলার পর্যাপ্ত জায়গা না থাকে, সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় ও চতুর্থ বেঞ্চ দুটি একই জায়গায় রেখে ক্রস (X) মার্ক করে দিতে হবে, যাতে সেখানে কোনও শিক্ষার্থী বসতে না পারে। এভাবেই তিন ফুট দূরত্ব মানার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

একই নিয়মে যদি বেঞ্চের দৈর্ঘ্য পাঁচ ফুট বা তার বেশি হয়, তবে প্রতিটি বেঞ্চে দুই জন করে ছয়টি বেঞ্চে মোট ১২ জন শিক্ষার্থী একসঙ্গে একটি ক্লাশে অংশ নিতে পারবে।

শিক্ষার্থীর সামর্থ্য ও চাহিদা বিবেচনায় এবং অভিভাবকদের মতামতের ভিত্তিতে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করার পরিকল্পনা করতে হবে। কোন কোন শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসবে, বা কোন কোন শিক্ষার্থী বিকল্প উপায়ে লেখাপড়া চালাবে বা দূরশিখনে যুক্ত হবে, সে বিষয়টি পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরাপদে পরিচালনার ধারণ ক্ষমতার তুলনায় অধিক শিক্ষার্থী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে আগ্রহী হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে সবাইকে সুযোগ দেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।

অন্যদিকে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধারণ ক্ষমতার তুলনায় কম শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলে বাকি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা নিতে হবে।

শুরুতে কোন কোন শ্রেণির কার্যক্রম দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা হবে তা বিবেচনা করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অবহিত করার পরিকল্পনা নিতে হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম ১৫ দিন কোনও একটি শ্রেণি কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার পরিকল্পনা নিতে হবে। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা, শ্রেণিকার্যক্রমের সময় ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে।

ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শ্রেণিকার্যক্রম একইসঙ্গে চালু করতে হলে কতটি শিফট প্রয়োজন হতে পারে এবং প্রতিটি শিফটের জন্য কর্মঘণ্টা কতটুকু হবে তা নির্ধারণের পরিকল্পনা নিতে হবে।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে DailyResultBD.com ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group