বিসিএস

বিসিএস ক্যাডার চয়েস কিভাবে দিবেন দেখে নিন

বিসিএস ক্যাডার চয়েস কিভাবে দিবেন দেখে নিন। নিজের উপযোগী সঠিক ক্যাডার চয়েস নির্ধারণ বিসিএস পরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ভাল পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও চয়েস দেওয়ার ভুলে প্রত্যাশিত ক্যাডার যেমন হাতের মুঠো থেকে ফসকে যেতে পারে, তেমনি ভাইভা বোর্ডের সামনেও তৈরি হতে পারে বিব্রতকর পরিস্থিতি। সুতরাং আবেদন করার পূর্বেই এ সংক্রান্ত সুচিন্তিত – সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রত্যেক বিসিএস পরীক্ষার্থীর অবশ্য কর্তব্য। অনেকেরই জিজ্ঞাসা, কোন কোন ক্যাডার চয়েস দিব এবং সেগুলোর মধ্যে কোনটি ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড চয়েসে রাখব?

প্রথমেই বলে রাখি, চাকুরীরত না থাকলে যে যে ক্যাডার চয়েস দেওয়ার যোগ্যতা আপনার আছে, তার সবগুলোই চয়েস লিস্টে রাখুন। আর আপনি যদি কোন সরকারি /বেসরকারি জবে থাকেন তাহলে শুধু সেই ক্যাডারগুলোই চয়েস দিন যেগুলোতে সুপারিশকৃত হলে আপনি যোগদান করবেন।

পছন্দক্রম নির্ধারণ:

সঠিক ক্যাডার চয়েস ক্রম ঠিক করার জন্য বিসিএসের ক্যাডারসমূহকে প্রধানত তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়—

ক. আইন প্রয়োগ ও প্রশাসন সংক্রান্ত-
১. পুলিশ
২.প্রশাসন
৩.আনসার

খ. অর্থ, বাণিজ্য রাজস্ব, আর্থিক প্রক্রিয়া সংক্রান্ত-
১. কাস্টমস
২.ট্যাক্সেশন
৩.অডিট এন্ড একাউন্টস
৪. ইকনোমিক
৫. বাণিজ্য

গ. পেশাগত
১. স্বাস্থ্য
২.শিক্ষা
৩. কৃষি
৪. বন
৫. প্রকৌশল

ঘ. অন্যান্য
১. পররাষ্ট্র
২. খাদ্য
৩. রেলওয়ে
৪. পরিবার পরিকল্পনা ইত্যাদি

এখন যদি আপনি-
ক.চ্যালেঞ্জ নিয়ে আপনার কর্মজীবনে দায়িত্ব পালন করতে চান।
খ. আইন প্রয়োগ বিচার ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখতে চান
গ. অন্যায় প্রতিরোধ ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে চান
ঘ. ছুটি শব্দটি ভুলে যেতে হতে পারে — এই বাস্তবতা মেনে নিয়ে কাজ করার মানসিকতা আছে।
ঙ. জনগনকে সরাসরি সেবা দেওয়ার ইচ্ছা
চ. সমাজে, কর্মস্থলে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ দেখার খুব ইচ্ছা।
ছ. রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে দায়িত্ব পালন করতে আপত্তি নেই।

তাহলে নিশ্চিন্তে আপনার ক্যাডার ক্রম হতে পারে— ক>খ>গ>ঘ। অর্থাৎ এক্ষেত্রে আপনার প্রথম তিনটি ক্যাডার চয়েস হবে পুলিশ, এডমিন, আনসার। এ তিনটি ক্যাডারের মধ্যে আপনার পছন্দ ও বাস্তবতা বিবেচনায় ১,২,৩ ক্রম নির্ধারণ করুন। এরপর ৪,৫,৬… নম্বরে খ,গ, ঘ এর ক্যাডার সমূহ চয়েস দিন। (পররাষ্ট্র ছাড়া, কারণ প্রথম তিনটি ক্যাডার চয়েস যেহেতু পুলিশ, এডমিন, আনসার, তাই পররাষ্ট্র চয়েস দেওয়া এখানে অর্থহীন)

আবার যদি আপনি:
১. ঝামেলামুক্ত জীবন যাপন করতে চান
২. নয়টা -পাঁচটা অফিস করার ইচ্ছা
৩.এসি রুম ছাড়া আপনার চলে না
৪.বেতনের বাইরেও প্রচুর বৈধ আর্থিক প্রণোদনা পেতে চান
৫.বিদেশ ভ্রমন ট্রেনিং ইত্যাদির দিকে ঝোক।

তাহলে নিশ্চিন্তে আপনার ক্যাডার ক্রম হতে পারে— খ>ক>গ>ঘ।

যদি আপনি
১. আপনার একাডেমিক অর্জিত জ্ঞানকে সরাসরি পেশাগত কাজে লাগাতে চান
২অর্থবিত্তের ( আমি বৈধ অর্থের কথা বলছি) বদলে সততাকে, ক্ষমতার বদলে সদারচারকে, কৃত্রিম অভিজাততন্ত্রের বদলে মানুষের শ্রদ্ধা ভালবাসা লাভকে জীবনের চরম মোক্ষ জ্ঞান করে থাকেন,

তাহলে আপনার ক্যাডার ক্রম হওয়া উচিত— গ>ক>খ> ঘ।

এছাড়াও আপনি যদি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে চান বা কূটনৈতিক উচ্চ মর্যাদা ভোগ করতে চান, তাহলে পররাষ্ট্র ফার্স্ট চয়েস হিসেবে রাখতে পারেন। পূর্বেই উল্লেখ করেছি, পররাষ্ট্র ক্যাডার সাধারণত অন্য সব ক্যাডারের আগেই পূরণ হয়ে যায়, তাই চয়েস দিতে চাইলে পররাষ্ট্র ক্যাডার এক নম্বরেই দেওয়া উচিত। অন্য ক্যাডার ফার্স্ট চয়েস দিয়ে পরের দিকে পররাষ্ট্র ক্যাডার চয়েস দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত কোন বিধিনিষেধ না থাকলেও এটা ভাইভাবোর্ড সদস্যগনের নিকট আপনার চিন্তার অপরিপক্বতা ও ক্যাডার চয়েস সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের অযৌক্তিকতাকেই প্রকাশ করবে।

জেনে রাখুন:
১. জাতীয় পরিচয় পত্রে যে স্বাক্ষর ব্যবহার করছেন ( এমনকি যদি বাংলা বা ইংরেজিতে নামও লিখে থাকেন) বিসিএসের আবেদন করার সময় সেই একই স্বাক্ষর ব্যবহার করুন, অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা থেকে রেহাই পাবেন।
২. আবেদন করার সময় সাম্প্রতিক ছবি ব্যবহার করুন। ছবিটি যেন এমনভাবে এডিট করা না হয়, যাতে আপনার বয়স, গায়ের রঙ, স্বাস্থ্য ইত্যাদি পরিবর্তিত হয়ে যায়।
৩. পররাষ্ট্র ক্যাডার চয়েস দিতে চাইলে ফার্স্ট চয়েস হিসেবেই দেওয়া উচিত। ইংরেজিতে দক্ষতা না থাকলে এই ক্যাডার চয়েস দেওয়ার চিন্তা বিসর্জন দিন।
৪.আপনি যে ক্যাডারেই চাকুরী করুন, সেখান থেকেও আপনি উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব হতে পারবেন। উপসচিব পদের ৭০% পূরণ করা হয় প্রশাসন ক্যাডার থেকে অবশিষ্ট ৩০% পূরণ হয় অন্যান্য ক্যাডার থেকে।
৫.অনেকেই আমার নিজের পছন্দক্রম জানতে চেয়েছেন।আমার নিজের পছন্দক্রম ছিল নিম্নরূপ—
১.পুলিশ
২. প্রশাসন
৩. আনসার
৬. পুলিশ ও আনসার ক্যাডারে আবেদন করতে হলে ন্যুনতম উচ্চতা ছেলেদের ক্ষেত্রে ৫’৪” আর মেয়েদের ক্ষেত্রে ৫’০” চাওয়া হয়েছে। এই উচ্চতার শর্ত যাদের পূরণ হয় না, তারা কোনভাবেই এই দুটি ক্যাডার পছন্দ তালিকায় রাখবেন না। এছাড়াও যাদের মেজর শারীরিক সমস্যা আছে, তারাও এ দুটি ক্যাডার চয়েস দেওয়া হতে বিরত থাকতে পারেন।

৭. পুলিশ ও আনসার ব্যতীত অন্যান্য ক্যাডারের জন্য ন্যূনতম উচ্চতা পুরুষ প্রার্থীদের ৫.০”, নারী প্রার্থীদের ৪’১০” প্রয়োজন হবে। ( অনেকে জানতে চান, এর চেয়ে কম উচ্চতাসম্পন্ন প্রার্থীদেরকে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে কিনা বা তারা বিসিএসে আবেদন করতে পারবেন কিনা। আমার ধারনা, এই উচ্চতার শর্ত অনেকটাই আনুষ্ঠানিক, কারন আজ পর্যন্ত এমন কোন উদাহরণ পাওয়া যায় নি যে সুপারিশকৃত কোন প্রার্থীকে শুধু উচ্চতার কারনে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাই আবেদন করতে পারেন নিশ্চিন্তে)।

৮.বর্তমান ঠিকানায় আপনি যদি দীর্ঘদিন অবস্থান না করেন, বা ওই এলাকায় আপনার তেমন চেনাজানা না থাকে, ভবিষ্যত ঝামেলা এড়ানোর জন্য আপনার স্থায়ী ঠিকানাকেই বর্তমান ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করতে পারেন। অর্থাৎ স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা একই দিতে পারেন। আর একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে আমার পরামর্শ থাকবে, আপনার বাবা/মায়ের নামে রেজিস্ট্রিকৃত জমি আছে, এমন জায়গাকে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে দিতে সচেষ্ট হোন। স্থায়ী ঠিকানা সম্পর্কিত ঝামেলার কারনে প্রতি বিসিএসেই অনেক প্রার্থী পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় বাদ পড়ে যান। তাই সাবধানতার বিকল্প নেই।

সবশেষে একটা বিষয় মনে করিয়ে দিতে চাই, বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি যে ক্যাডারেই চাকুরী লাভ করেন না কেন আক্ষরিক অর্থে আপনি জনগণের চাকরই হতে যাচ্ছেন। আপনি যদি মনে করে থাকেন নির্দিষ্ট কোন ক্যাডার ফকির থেকে আপনাকে আমির বানিয়ে দিবে, সমাজের কেউকেটা হিসেবে আপনার উত্তরণ ঘটাবে, ক্ষমতার প্রবল দাপটে চাকরের পদে থেকেও মালিকায় ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারবেন, আইন প্রয়োগের অধিকার, বৈধ-অবৈধ অর্থবিত্তের জোরে যা খুশি তা করার লাইসেন্স পেয়ে যাবেন , তাহলে করজোড়ে ক্ষমা চেয়ে মিনতি রাখব, আমার এ পরামর্শ আপনার জন্য নয়।

এ গরীব দেশের সিভিল সার্ভিসকে কলুষিত না করে আপনি বরং অন্য পেশায় ট্রাই করুন। হয়ত আপনি আপনার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন। আর একজন শিক্ষিত, সচেতন, দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে জনগনের প্রকৃত চাকরের দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাওয়ার জন্য আপনারা যারা দিনরাত নির্ঘুম একাগ্র অধ্যবসায় করে চলেছেন, ভবিষ্যতের একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জনবান্ধব- দুর্নীতিমুক্ত-নাগরিক সেবামুখী সিভিল সার্ভিসে আপনাকে স্বাগতম।

লেখক: লেখক: সহকারী পুলিশ কমিশনার
কমান্ডার, র‌্যাব-৯, শ্রীমঙ্গল ক্যাম্প

বিসিএস ক্যাডার চয়েস কিভাবে দিবেন দেখে নিন। নিজের উপযোগী সঠিক ক্যাডার চয়েস নির্ধারণ বিসিএস পরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ভাল পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও চয়েস দেওয়ার ভুলে প্রত্যাশিত ক্যাডার যেমন হাতের মুঠো থেকে ফসকে

ক্যাডার চয়েস দেওয়া সম্পর্কিত বহুল প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা

সঠিকভাবে ক্যাডার চয়েস প্রদান নিশ্চিত করা একজন প্রার্থীর কাঙ্ক্ষিত ক্যাডার পাবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত। অথচ আমার নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, বিসিএস প্রার্থীদের মধ্যে ক্যাডার চয়েস সম্পর্কে প্রচলিত অনেক ভুল ধারনা রয়েছে, আবেদন করার পূর্বে যা নিরসন না হলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। নিম্নে তেমন কিছু ভুল ধারনা ও সে সম্পর্কিত সঠিক তথ্য তুলে ধরা হল, আশা করি, আপনাদের কাজে আসবে।

যে ক্যাডারে পদ সংখ্যা বেশি সেই ক্যাডার চয়েস আগে দেওয়া নাকি ভাল? কম পোস্ট সম্পন্ন ক্যাডার আগে, আর বেশি পোস্ট সম্পন্ন ক্যাডার পরে চয়েস দিলে পরে নাকি কোন ক্যাডারই পাওয়া যায় না?
উত্তরঃ পিএসসির ক্যাডার বণ্টন প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারনার অভাব থেকেই এই ভুলের জন্ম। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর যোগ করে প্রার্থীদের যে মেধাতালিকা হবে, তার ভিত্তিতেই ক্যাডার বন্টিত হবে, আপনার ক্যাডার চয়েস যাই হোক, সেটা এ ক্ষেত্রে গুরুত্ববহ নয়।
উদাহরণস্বরূপ আমরা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা মিলে নম্বরের ভিত্তিতে ১ম থেকে ৫০ তম প্রার্থীর ক্যাডার প্রাপ্তির প্রক্রিয়াটি পর্যালোচনা করতে পারি।

প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে যিনি প্রথম হয়েছেন, তিনি যে ক্যাডার ফার্স্ট চয়েস দিয়েছেন, সেটা নিশ্চিত ভাবেই পাবেন, কারন তখনো সব ক্যাডার পদ এভেইলেবল রয়েছে।( এভাবে প্রথম বেশ কয়েকজনই হয়ত সেটা পাবেন।

যিনি মেধাতালিকায় ৩০ তম হয়েছেন, তার ফার্স্ট চয়েস ছিল পররাষ্ট্র। দেখা গেল পররাষ্ট্র ক্যাডার শেষ,( অর্থাৎ তার আগের মেধাক্রমের কমপক্ষে ২১ জন প্রার্থীর ফার্স্ট চয়েস ছিল পররাষ্ট্র, এবং সে মোতাবেক তারা পররাষ্ট্র ক্যাডার পেয়েছেন) তাহলে দেখা হবে তার দ্বিতীয় চয়েস কি, সেটি যদি হয় পুলিশ, তাহলে তিনি এখন সেই পুলিশ ক্যাডারই পাবেন।

যিনি ৭০ তম হয়েছেন, তার ফার্স্ট চয়েস যদি হয় প্রশাসন, তাহলে তিনি তার পছন্দের ক্যাডারই পাবেন। কারন প্রশাসন ক্যাডার তো তখনো শেষ হয় নি। যদি তার ফার্স্ট চয়েস হত পররাষ্ট্র, তাহলে, যেহেতু সেই ক্যাডার অলরেডি শেষ, তাই দেখা হত তার দ্বিতীয় চয়েস কি।
যিনি ২০০ তম হয়েছেন, দেখা গেল তার ফার্স্ট চয়েস ছিল পররাষ্ট্র, তা যে তিনি পাবেন না, তা তো বুঝাই যাচ্ছে, কারন সেটা তো আগেই শেষ। এবার দেখা হবে তার সেকেন্ড চয়েস কি, ধরি সেকেন্ড চয়েস পুলিশ, দেখা গেল, পুলিশ ক্যাডারও শেষ, অর্থাৎ এর আগেই ১০০ টি পুলিশ ক্যাডারের পদ মেধাক্রম অনুযায়ী পূরণ হয়ে গেছে, তখন দেখা হবে তার থার্ড চয়েস কি ছিল,ধরি থার্ড চয়েস এডমিন, কর্তৃপক্ষ দেখলেন যে প্রশাসনে এখনো পদ পূর্ণ হয় নি, তখন তিনি এডমিন ক্যাডারই পাবেন।
এককথায় ১০ টা প্লেটে ভালমন্দ মিলিয়ে ১০ ধরনের ফল আছে। যাদের মার্কস বেশি তারা তাদের ফল বেছে নেওয়ার পর সেই ফল অবশিষ্ট থাকবে সেখান থেকে তার পরের জন ফল গ্রহন করবে।
তাই পদ সংখ্যা কম বেশি যাই হোক, আপনি আপনার পছন্দের ক্যাডারগুলোই একের পর এক পূরন করে যাবেন।

২/৩ টার বেশি ক্যাডার চয়েস দেওয়া নাকি ভাল নয়?
উত্তরঃ আমি মনে করি আপনি যদি কোন চাকুরীতে না থাকেন, তাহলে যে কয়টি ক্যাডার চয়েস দেওয়া সম্ভব, তার সবগুলোই ধারাবাহিক ভাবে একের পর এক চয়েস লিস্টে দিয়ে দিন। কারন পছন্দের ক্যাডার পেলে তো ভাল, আর না হয় অন্তত বেকারত্ব ঘোচানোর জন্য হলেও আপনার যে কোন একটা চাকুরি দরকার।

আর আপনি যদি সরকারি /বেসরকারি কোন ভাল চাকুরী তে থাকেন, তাহলে আপনি সিদ্ধান্ত নিন যে, কোন কোন ক্যাডারে সুপারিশকৃত হলে আপনি চাকুরি করবেন, তারপর সে মোতাবেক ক্যাডার চয়েস দিন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এডি, এনএসআই এর এডি, বা পাবলিক ভার্সিটির টিচারদের পছন্দের দু তিনটির বেশি ক্যাডার চয়েস দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না (পুলিশ, পররাষ্ট্র ও এডমিন দেওয়ার প্রবণতাই বেশি।)

আবেদনের সময়সীমার শেষমুহূর্তে আবেদন করলে নাকি ভাইভায় সুবিধা হয়। তখন নাকি আগের দিনগুলোর ভাইভা প্রশ্ন বাজারে পাওয়া যায়, এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে ভাল ফল লাভ করা যায়
উত্তরঃ ভুল। যে সুবিধার কথা বলা হচ্ছে, সেটা এক শ্রেণীর মানুষের ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে পরিচালিত প্রচারনার ফলে সৃষ্ট ভুল ধারনা মাত্র। এরা নিজেরা ভাইভা উপযোগী কিছু প্রশ্ন লিখে বিগত বছরের ভাইভার কিছু প্রশ্ন তার সাথে মিশিয়ে সেগুলো চলতি বছরের ভাইভা প্রশ্ন হিসেবে বাজারে বিক্রি করে। তারা তাদের সুচতুর ব্যবসায়িক বুদ্ধি খাটিয়ে এমনভাবে তারিখ দিয়ে দিয়ে কথিত ভাইভার প্রশ্ন বাজারে আনে, সুক্ষ্মভাবে চিন্তা না করলে যে কেউই তাদের কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে বোকা বনে যাবেন।

উল্টো দেরিতে আবেদন করলে আপনার পরীক্ষার সেন্টার পড়বে গাজীপুর, উত্তরা, শনির আখড়া ইত্যাদি দূরবর্তী কেন্দ্রে, যা আপনার দুর্ভোগই শুধু বাড়াবে। আমি মনে করি আবেদন করা উচিত ১৫/১৬ তম দিনে, তাতে মোটামুটি মাঝামাঝি একটা জায়গায় রেজি: নম্বর পাওয়া যায়, তখন আশা করা যায় যে ঢাকা শহরের কোন স্কুল কলেজেই আপনার প্রিলি রিটেনের সেন্টার পড়বে। তখন একেবারে প্রথম দিকে ভাইভা দেওয়ার ঝুঁকি(!!) টাও এড়ানো যায়।

আমার হাত-পা ছোটবেলায় ভাঙ্গা/ চোখের নিম্ন দৃষ্টিসীমা / হার্টের প্রবলেম/ অঙ্গহানি/ অন্য কোন মেজর শারীরিক সমস্যা আছে, আমি কোন কোন ক্যাডার চয়েস দিতে পারব?
উত্তরঃ পিএসসির আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আপনি সব ক্যাডারই চয়েস দিতে পারেন। তবে পুলিশ বা আনসার ক্যাডারে যোগ দিলে যে ট্রেনিং করতে হয়, এই শারীরিক সমস্যা সেখানে আপনার বড় প্রতিবন্ধক হিসেবে দেখা দিবে। তাই পুলিশ এবং আনসার বাদ দিয়ে অন্য সকল ক্যাডার আপনি চয়েস দিতে পারেন।

বিসিএস ক্যাডার হবার জন্য সর্বনিম্ন কতটুকু উচ্চতা থাকতে হয়?
উত্তরঃ পুলিশ এবং আনসার ক্যাডারের জন্য পুরুষ প্রার্থীগণের সর্বনিম্ন ৫`৪” এবং নারী প্রার্থীগণের জন্য সর্বনিম্ন ৫`০”” উচ্চতার অধিকারী হতে হয়। অন্যথায় চূড়ান্ত মেডিকেলে আপনি বাদ পড়ে যাবেন। পুলিশ ও আনসার ব্যতীত অন্যান্য ক্যাডারের জন্য ন্যূনতম উচ্চতা পুরুষ প্রার্থীদের ৫.০”, নারী প্রার্থীদের ৪`১০” প্রয়োজন হবে।
চশমা বা কন্টাক্ট লেন্স যারা ইউজ করেন, তারা কি পুলিশ ক্যাডার চয়েস দিতে পারবেন?
উত্তরঃ কোন সমস্যা নেই, দেওয়া যাবে।

পররাষ্ট্র ক্যাডার ফার্স্ট চয়েস দিলে নাকি সব পরীক্ষা ইংরেজি তে দিতে হয়?
উত্তরঃ আপনার ক্যাডার চয়েস যা-ই হোক, প্রিলি রিটেনে অভিন্ন প্রশ্নপত্রেই আপনাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। তবে হ্যা, পররাষ্ট্র ক্যাডার ফার্স্ট চয়েস দিলে ভাইভা পুরোপুরি ইংরেজি মাধ্যমে হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯৯%। তাই যাদের স্পোকেন ইংলিশে আত্মবিশ্বাসের অভাব আছে, তারা পররাষ্ট্র ফার্স্ট চয়েস দেওয়ার আগে দুবার ভেবে নিলে ভাল হবে।

শিক্ষা ক্যাডারকে চয়েজে সবার শেষে রাখলে ভাইভা বোর্ড কি নেতিবাচক হিসেবে নেয় !
উত্তরঃ নেতিবাচক নেওয়ার কোন কারন নেই। তবে বোর্ড অনেক সময় জানতে চাইতে পারে, এত মহান পেশা সবার শেষে কেন? তখন আপনি সন্তোষজনক উত্তর দিলে কোন প্রবলেম নেই
যদি ১ম চয়েস প্রশাসন, ২য় চয়েস শিক্ষা ক্যাডার হয়, তাহলে প্রশাসনের যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও বোর্ড কি শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ করতে পারেন?
উত্তরঃ ভাইভা বোর্ড সুপারিশ করার কেউ না। বোর্ড শুধু আপনার পারফর্মেন্স অনুযায়ী ২০০ নম্বরের মধ্যে ভাইভার মার্কস দিবে, নাথিং এলস। তার পর আপনার লিখিত ও ভাইভায় প্রাপ্ত মার্কস অনুযায়ী আপনি প্রথম/ দ্বিতীয়/তৃতীয় পছন্দের ক্যাডারে সুপারিশকৃত হবেন।

১ম ও ২য় চয়েস পুলিশ ও প্রশাসন দেওয়ার পর ৩য় চয়েস পররাষ্ট্র দেওয়া কি উচিত হবে?
উত্তরঃ যৌক্তিক হবে না, কারন পরীক্ষা যত ভাল বা খারাপ হোক, পুলিশ এবং প্রশাসন ছাড়া কোন অবস্থাতেই আপনি পররাষ্ট্র পাবেন না। তাই দিতে চাইলে পররাষ্ট্র ফার্স্ট চয়েস হিসেবেই দেওয়া উচিত।
লেখক: শামিম আনোয়ার
এএসপি, ৩৪তম বিসিএস (পুলিশ)

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে DailyResultBD.com ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group