বিসিএসে ১০০ নম্বরের প্রশ্ন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক হবে!
বিসিএসে ১০০ নম্বরের প্রশ্ন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক হবে! মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন,মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আগামী প্রজন্মের মধ্যে সম্যক ধারণা দিতে আগামী বিসিএস পরীক্ষায় ১০০ নম্বর নির্ধারিত থাকবে ১৯৭১ সালে সংঘটিত ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, দেশের সর্বস্তরে স্বাধীনতা বিরোধীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারীরা নগণ্য। মানুষ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলে যাচ্ছে বলেই মুক্তিযোদ্ধারা আজ অবমূল্যায়িত হচ্ছে। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাসের পাশাপাশি স্বাধীনতা বিরোধীদের ইতিহাসও পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এছাড়া বিসিএসে মুক্তিযুদ্ধের ওপর ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নিতে হবে।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা নৌ-কমান্ডো অ্যাসোসিয়েশনের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ১২ ধরনের বারকোড দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সার্টিফিকেট ছাপানো শেষ হয়েছে। ১৮ জুলাই থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সনদ বিতরণ করা হবে।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বিসিএস পরীক্ষায় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নিতে হবে। অনেক বলার পর ৫০ নম্বর করা হয়েছে। আমরা এখনও অনেক ব্রিটিশ আইনেই চলি। কিছু কিছু বিষয়ে এখনও নতুন আইন হয়নি স্বাধীনতার পরে।
তিনি বলেন, অনেক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস জানে না। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সন্তানদের ইতিহাস না শেখালে অচিরেই দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলার ১১টি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনসমূহের উদ্বোধনী এবং এ উপলক্ষে জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে আয়োজিত এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক মো. হারুন-অর-রশীদের সভাপতিত্বে আয়োজিত উদ্ধোধনী ও জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মতবিনিময়সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, জাতীয় সংসদের বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শহিদুজ্জামান সরকার এমপি, মো. ছলিম উদ্দিন তরফদার এমপি, নওগাঁর পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল হাকিম এবং নওগাঁ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. হারুন-অল-রশীদ।
বর্তমান সরকার কর্তৃক দেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সরকারের দেওয়া সর্বোচ্চ মর্যাদার কথা উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানীভাতা আরো বৃদ্ধি করা, বিজয় দিবস ভাতা এবং উৎসব ভাতা প্রদানের পকিল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। তা অবিলম্বে বাস্তবায়িত হবে।
মন্ত্রী দেশের ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার এই ৪৮ বছরে মাত্র ১৯ বছর ক্ষমতায় রয়েছে। এই ১৯ বছরে দেশের শতকরা ৮০ ভাগ উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। অথচ বিএনপি-জামায়াত জোট ও অন্যান্যরা ৩০ বছর এ দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। তারা এই দীর্ঘ ৩০ বছরে মাত্র ২০ ভাগ উন্নয়ন করেছে।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধাপে ধাপে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করেছিলেন। অবশেষে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার চূড়ান্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁর ডাকেই এ দেশের অকুতোভয় বাঙালি অস্ত্র হাতে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
এর আগে মন্ত্রী পর্দা টেনে নওগাঁ জেলার ১১টি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনসমূহের ফলক উন্মোচন করেন। এলজিইডি মোট ২৪ কোটি ১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা ব্যয়ে জেলার ১১টি উপজেলায় ১১টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করেছে।